এই ব্লগটি সন্ধান করুন

সোমবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০১৭

মুসলমানদের বিভ্রান্তিকর বিভ্রান্তি।

প্রায় সব অর্ধশিক্ষিত মুসলমানই মনে করে যে কুরআনে বিজ্ঞানের ছড়াছড়ি। কেউ কেউ অতি উৎসাহী হয়ে দাবীই করে বসে যে বিজ্ঞানীরা নাকি কুরআন গবেষণা করেই সমস্ত বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারগুলো করেছেন। কিন্তু যখন প্রম্ন করা হয় যদি কুরআনে সত্যিই বিজ্ঞান থেকে থাকে এবং কুরআন পড়েই যদি বিজ্ঞানের সব কিছুই আবিষ্কার করা যায় তবে মুসলমানরা কুরআন পড়ে বিজ্ঞানের কিছুই আবিষ্কার করতে পারে না কেন? তখনই শুরু হয়ে যায় মুসলমানীয় ত্যাঁনা প্যাচানো। নানা রকম কুযুক্তি অপযুক্তি দিয়ে গায়ের জোরে প্রতিষ্ঠা করতে চায় যে কুরআনেই বিজ্ঞানের সব কিছু রয়েছে। আর বিজ্ঞানীরা কুরআন থেকেই সব কিছু আবিষ্কার করেছে। যদি সত্যিউ তাই হতো তবে কুরআনের হাফেজ, ইসলামবিদ্যানগনই হতো পৃথিবীর শ্রেষ্ট বিজ্ঞানী। সারা পৃথিবীতে অঅসংখ্য মুসলমান পন্ডিত অপন্ডিতরা দিন রাত ভরে কুরআন নিয়েই পড়ে থাকে কিন্দু এক ছটাক বিজ্ঞানও তাদের শরীর থেকে বের হয় না। পৃথিবীর তাবৎ মুসলমানরা যদি দিন রাত চেষ্টা করতে থাকে তবুও কুরআন পড়ে কোন বিজ্ঞানের জ্ঞানই বের করতে পারবে না। (যেসব মুসলমান বিজ্ঞানী বিজ্ঞানে অবদান রেখেছে এবং রেখে চলেছে তারা ইহুদী নাসারা আর নাস্তিকদের বানানো বিজ্ঞানের বই পড়েই বিজ্ঞানের আবিষ্কারগুলো করে। কুরআন বা কোন আরবীয় বই পড়ে নয়। এটা ১০০ ভাগ সত্য।

যদিও মুসলমানরা দিন রাত ধরে চোখ কান বন্ধ করে দাবী করতেই থাকে যে কুরআনে প্রচুর বিজ্ঞান রয়েছে কিন্তু আমরা যখনই কুরআন পড়ে দেখি সেখানে শুধু ভুল আর ভুল দেখতে পাই। তবে তারা কেন এই মিথ্যা দাবীগুলো করে? তাদের সাথে কথা বলতে গেলে বুঝা যায় যে তারা কুরআনকে বিজ্ঞানময় বানাতে যেয়ে নানা রকমের গোজামিল দিয়ে থাকে। তারা বলে যদিও কুরআনে চাঁদের নিজের আলোর কথা বলা হয়েছে কিন্তু কুরআনে আসলে চাঁদের নিজের আলোর জায়গায় চাঁদের প্রতিফলিত আলো হবে। অর্থাৎ তারা কুরআনের অর্থের পরিবর্তন করে ফেলেছে এবং বিজ্ঞানের সাথে মিল রেখেই নতুন অর্থ করেছে যাতে কুরআনের এই ভুলটিকে সংশোষধ করা যায় এবং একই সাথে কুরআনকে বিজ্ঞানময় বানানো যায়। কতবড় ভন্ডামী আর প্রতারনার মাধ্যমেই না তারা কুরআনকে বিজ্ঞানময় বানাচ্ছে!
আকাশ আর পৃথিবী এক সাথে মিশে ছিলো এবং কুরআন লেখক এই দুটোকে আলাদা করে নিয়েছেন- এমনটাই কুরআনে লেখা রয়েছে। এই লেখাটি দেখিয়েই মুসলমানরা দাবী করে কুরআনে নাকী বিগ ব্যাং-এর কথা বলা হয়েছে। বিগ ব্যাং-এ যেমন বলা হয়েছে বিশ্বজগত সৃষ্টি হবার আগে সব কিছু এক সাথে একটি অতিক্ষুদ্র বিন্দুতে মিলিত ছিল ঠিক সেটাই নাকি কুরআনে বলা হয়েছে পৃথিবী আর আকাশের এক সাথে মিশে ছিল এই কথাটি কুরআনে লেখার মাধ্যমে।
কিন্তু মাথায় সামান্যতম ঘিলু থাকা মানুষও বুঝতে পারবে এখানে কুরআন সম্পূর্ণই বিগ ব্যাং-এর বিপরীত কথা বলেছে। উপরন্তু কুরআন এই দাবীটি দ্বারা বিগ ব্যাং-কে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে সম্পূর্ণ বিজ্ঞান বিরুদ্ধ কথা বলেছে।
কারণ আমরা জানি পৃথিবী নামের আমাদের গ্রহটি সৃষ্টি হয়েছে বিগ ব্যাং-এরও কোটি কোটি বছর পড়ে। আর আকাশ হলো একটি গ্যাসীয় পদার্থের আস্তরণ যা পৃথিবীকে ঘিরে রেখেছে। সুতরাং পৃথিবী আর আকাশ মিশে ছিলো আর এদুটোকে আলাদা করে দেওয়ার সাথে বিগ ব্যাং-এর কোনই সম্পর্ক নেই। লক্ষ করলেই স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে কুরআনের এই কথাটি দাবী করছে পৃথিবী আর আকাশ বিগ ব্যাং-এর আগেই ছিল। যা সম্পূর্ণই বিজ্ঞান বিরুদ্ধ কথা। এটা সম্পূর্ণটাই মিথ্যা। আর কুরআনের এই ভুল কথাটি দিয়েই কিনা মুসলমানরা কুরআনেকে বিজ্ঞানময় দাবী করে। কতটা হাস্যকর এদের দাবী। জ্ঞান বিজ্ঞানে যে এরা প্রচন্ড পিছিয়ে পরা একটা জাতি সেটা তাদের এসব অজ্ঞতা সম্পন্ন দাবী দেখলেই বুঝা যায়।
কুরআনের এসব আয়াততো বিগ ব্যাং-এর কথা বলেই নি উপরন্তু এগুলো সম্পূর্ণই বিজ্ঞানের বিপরীত কথা বলেছে। যা প্রমাণ করে কুরআন একটি প্রাচীন আরবের অজ্ঞ মানুষের লেখা বই।
মুসলমানরা এসব দাবীর পরিপ্রেক্ষিতেও নানা রকম কুযুক্তি অপযুক্তির আমদানী করে থাকে। তারা দাবী করে যেহেতু একটি শব্দের অনেকগুলো অর্থ থাকতে পারে তাই তারা যেমন খুশি কুরআনের অর্থ করতে পারে। এমনকি কুরআনে ব্যবহৃত শব্দগুলোর নতুন নতুন অর্থ বানিয়েও তারা সেগুলো কুরআনে ব্যবহার করতে পারে। এমনকি তারা চাইলে তাদের নিজেদের মতো করে বিজ্ঞানের সাথে মিলিয়েও কুরআনের নতুন অর্থ বানিয়ে কুরআনকে বিজ্ঞানময় দাবী করতে পারে। আর এভাবেই নাকি কুরআন বিজ্ঞানময় গ্রন্থ হয়ে উঠে। তাদের করা নতুন এবং সম্পূর্ণ ভিন্ন অর্থটি যতই অদ্ভুত হোক না কেন সেটাই নাকি সঠিক। কিন্তু তাদের করা অর্থটি যে সঠিক এমন কোন প্রমাণ তারা দেখাতে পারে না এমনকি তারা দাবী করে তাদের প্রমাণ দেখানোর কোন দরকারই নাকি নেই। তারা যে নতুন ও সম্পূর্ণ ভিন্ন অর্থটি বিজ্ঞানের সাথে মিলাতে তৈরি করেছে সেটাই নাকি সঠিক।
অথচ তারা এক মুহুর্তেই কুরআনকে বিজ্ঞানময় গ্রন্থ বানাতে যেয়ে সম্পূর্ণই নতুন ও ভিন্ন অর্থ তৈরি করেছে যেমন খুশি কুরআনের অর্থ তৈরি করার মাধ্যমে যা গত ১৪০০ বছর ধরে চলে আসা কুরআনের অর্থ থেকে সম্পূর্ণই ভিন্ন।
তাদের দাবী তারা যেমন খুশি অর্থ করার পরেও নাকি কুরআন আল্লাহর লেখা গ্রন্থই থাকে। যদিও আল্লাহর লেখা কুরআনের থেকে তাদের করা নতুন কুরআনের অর্থের মধ্যে আকাশ পাতালের পার্থক্য থাকে।

এছাড়াও তারা অমুক শব্দের তমুক অর্থ এবং তমুক শব্দের ঘমুক অর্থ- এসব বলে বলে দাবী করে তাই তারা কুরআনের যেমন খুশি অর্থ করতে পারে। আল্লাহ নাকি এভাবেই কুরআনকে নাজিল করেছে। যদিও তাদের করা কুরআনের নতুন অর্থটি গত ১৪০০ বছর ধরে চলে আসা কুরআনের অর্থ থেকে সম্পূর্ণই ভিন্ন।
তাহলে প্রশ্ন হলো তারা কিসের ভিত্তিতে কুরআনের নতুন অর্থ করেছে বিজ্ঞানের সাথে কু্রআনকে মিলাতে যেয়ে। তারা যেমনটা কুরআনের সম্পূর্ণ ভিন্ন অর্থ করেছে সেটা যে আল্লাহ লিখিত কুরআনই সেটারই বা প্রমাণ কি? আমরা তো দেখছি তারাই তাদের নিজেদের মতো করে কুরআনের নতুন অর্থ করছে! তাই না? তবে সেটা আল্লাহ প্রদত্ত কুরআনের অর্থ হলো কি করে?

এর উত্তরে তারা দাবী করে যে যদিও তারা এর কোন প্রমাণ দিতে পারবে না তবুও সেটাই সত্য। এবং এর বাইরে কুরআনের অন্য কোনই অর্থ পারবে না।
এছাড়া নানা রকমের ত্যাঁনাপ্যাঁচানো কুযুক্তিতো রয়েছেই তাদের!

এভাবেই ভুলে ভরা কুরআন হয়ে উঠছে বিজ্ঞানময় কিতাব। কেউ মেনে নেয় না যেহেতু নানারকম কুযুক্তি, অপযুক্তি এবং প্রমাণহীন দাবী এসব তবুও তারা গায়ের জোরেও কুরআনকে বিজ্ঞানময় বানানোর জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছে।

মুসলমানদের এসব কাজ কারবার দেখলে হাসবো নাকি কাঁদবো আমরা কিছুই বুঝে উঠতে পারি না।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন